ঢাকা ১১:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫

গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদ ও ফিলিস্তিনে হামাসের নেতৃত্বের দাবিতে চুয়াডাঙ্গায় বিক্ষোভ

জেলা প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা
  • আপডেট সময় : ০৩:৫৯:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫
  • / 47
প্রথম পোস্ট সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইসরায়েলের চলমান গণহত্যার প্রতিবাদ এবং ফিলিস্তিনের দায়িত্ব হামাসের হাতে অর্পণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ইন্তিফাদা ফাউন্ডেশন চুয়াডাঙ্গা জোন। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর শহরের বড়বাজার গোল চত্বরে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চুয়াডাঙ্গা জোনের সভাপতি এস এম সাইফুল ইসলাম।

বিক্ষোভপূর্ব সমাবেশে প্রধান বক্তা এস এম সাইফুল ইসলাম বলেন, “বিশ্বের চোখের সামনে ইসরায়েল আবারও তার বর্বরতা অব্যাহত রেখেছে। সম্প্রতি গাজায় যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করে আশ্রয়কেন্দ্রে বিমান হামলা চালিয়ে শত শত নিরীহ নারী, শিশু ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে ইহুদিবাদী দখলদার শক্তি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিন্দা এবং বিক্ষোভ এই সন্ত্রাসী রাষ্ট্রকে থামাতে ব্যর্থ হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, “ফিলিস্তিনের মুক্তির একমাত্র পথ হলো স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, যেখানে হামাসসহ প্রতিরোধ বাহিনীগুলোর নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী সরকার গঠন করা হবে। তথাকথিত দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান কোনো সমাধান নয়; ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক ভূমিতে পূর্ণ স্বাধীনতাই একমাত্র গ্রহণযোগ্য পথ।”

আরও পড়ুন: রাশিয়ার প্রতিশ্রুতি: সিরিয়ার ঐক্য ও স্থিতিশীলতার পাশে পুতিন

মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সামরিক অভিযানের সময় এখনই। গত ৮০ বছর ধরে শুধু নিন্দা প্রকাশ করে এসেছে বিশ্ব, কিন্তু এর কোনো ফল পাওয়া যায়নি। ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করা মুসলিম বিশ্বের ঈমানী ও নৈতিক দায়িত্ব।”

বক্তব্যে তিনি সম্প্রতি জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব এডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিকের ইসরায়েলপন্থী মন্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, “একটি টকশোতে তিনি ইসরায়েলের পক্ষে জনমত গঠনের উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। ২০২২ সালে তিনি মসজিদে আকসা দখল করে মন্দির স্থাপনের পক্ষেও কথা বলেছিলেন। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, তাকে আইনের আওতায় এনে তার বক্তব্যের পেছনের শক্তি খতিয়ে দেখা হোক।”

বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আসুন, ফিলিস্তিনের মজলুম জনগণের পাশে দাঁড়াই। অর্থ ও সহযোগিতা পাঠিয়ে তাদের প্রতিরোধ সংগ্রামকে শক্তিশালী করি। আমরা দোয়া করি, মহান আল্লাহ আমাদের বিজয়ী ফিলিস্তিনে মসজিদে আকসায় নামাজ আদায়ের সুযোগ দিন।” তিনি গাজার গণহত্যার বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার থাকার আহ্বান জানান এবং কর্মসূচি সফল করায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ দেন।

সমাবেশে চার দফা দাবি উত্থাপন করা হয়:
১. পাসপোর্টে ‘এক্সেপ্ট ইজরায়েল’ পুনঃস্থাপন করে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কঠোর রাষ্ট্রীয় অবস্থান গ্রহণ।
২. বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তকে মসজিদে আকসা ও ফিলিস্তিনের সংগ্রামের প্রকৃত ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত করা।
৩. ইসরায়েলি প্রযুক্তি, বিশেষ করে স্পাইওয়ার পেগাসাসের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা।
৪. ভারত-ইসরায়েল চক্রের বাংলাদেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের দালালদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সেক্রেটারী তুষার ইমরান সরকার, মুফতী হাবিবুর রহমান, ইন্তিফাদা ফাউন্ডেশনের সদস্য মাওলানা শাফায়াত আদনান, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সূরাহ সদস্য আবু বকর সিদ্দিক, ইসলামী ছাত্রশিবির চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার প্রচার সম্পাদক বায়জিদ বোস্তামী, মেহেদী হাসান ও জামাল উদ্দিনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

নিউজটি শেয়ার করুন

গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদ ও ফিলিস্তিনে হামাসের নেতৃত্বের দাবিতে চুয়াডাঙ্গায় বিক্ষোভ

আপডেট সময় : ০৩:৫৯:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫

ইসরায়েলের চলমান গণহত্যার প্রতিবাদ এবং ফিলিস্তিনের দায়িত্ব হামাসের হাতে অর্পণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ইন্তিফাদা ফাউন্ডেশন চুয়াডাঙ্গা জোন। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর শহরের বড়বাজার গোল চত্বরে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চুয়াডাঙ্গা জোনের সভাপতি এস এম সাইফুল ইসলাম।

বিক্ষোভপূর্ব সমাবেশে প্রধান বক্তা এস এম সাইফুল ইসলাম বলেন, “বিশ্বের চোখের সামনে ইসরায়েল আবারও তার বর্বরতা অব্যাহত রেখেছে। সম্প্রতি গাজায় যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করে আশ্রয়কেন্দ্রে বিমান হামলা চালিয়ে শত শত নিরীহ নারী, শিশু ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে ইহুদিবাদী দখলদার শক্তি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিন্দা এবং বিক্ষোভ এই সন্ত্রাসী রাষ্ট্রকে থামাতে ব্যর্থ হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, “ফিলিস্তিনের মুক্তির একমাত্র পথ হলো স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, যেখানে হামাসসহ প্রতিরোধ বাহিনীগুলোর নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী সরকার গঠন করা হবে। তথাকথিত দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান কোনো সমাধান নয়; ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক ভূমিতে পূর্ণ স্বাধীনতাই একমাত্র গ্রহণযোগ্য পথ।”

আরও পড়ুন: রাশিয়ার প্রতিশ্রুতি: সিরিয়ার ঐক্য ও স্থিতিশীলতার পাশে পুতিন

মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সামরিক অভিযানের সময় এখনই। গত ৮০ বছর ধরে শুধু নিন্দা প্রকাশ করে এসেছে বিশ্ব, কিন্তু এর কোনো ফল পাওয়া যায়নি। ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করা মুসলিম বিশ্বের ঈমানী ও নৈতিক দায়িত্ব।”

বক্তব্যে তিনি সম্প্রতি জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব এডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিকের ইসরায়েলপন্থী মন্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, “একটি টকশোতে তিনি ইসরায়েলের পক্ষে জনমত গঠনের উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। ২০২২ সালে তিনি মসজিদে আকসা দখল করে মন্দির স্থাপনের পক্ষেও কথা বলেছিলেন। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, তাকে আইনের আওতায় এনে তার বক্তব্যের পেছনের শক্তি খতিয়ে দেখা হোক।”

বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আসুন, ফিলিস্তিনের মজলুম জনগণের পাশে দাঁড়াই। অর্থ ও সহযোগিতা পাঠিয়ে তাদের প্রতিরোধ সংগ্রামকে শক্তিশালী করি। আমরা দোয়া করি, মহান আল্লাহ আমাদের বিজয়ী ফিলিস্তিনে মসজিদে আকসায় নামাজ আদায়ের সুযোগ দিন।” তিনি গাজার গণহত্যার বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার থাকার আহ্বান জানান এবং কর্মসূচি সফল করায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ দেন।

সমাবেশে চার দফা দাবি উত্থাপন করা হয়:
১. পাসপোর্টে ‘এক্সেপ্ট ইজরায়েল’ পুনঃস্থাপন করে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কঠোর রাষ্ট্রীয় অবস্থান গ্রহণ।
২. বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তকে মসজিদে আকসা ও ফিলিস্তিনের সংগ্রামের প্রকৃত ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত করা।
৩. ইসরায়েলি প্রযুক্তি, বিশেষ করে স্পাইওয়ার পেগাসাসের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা।
৪. ভারত-ইসরায়েল চক্রের বাংলাদেশবিরোধী কর্মকাণ্ডের দালালদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সেক্রেটারী তুষার ইমরান সরকার, মুফতী হাবিবুর রহমান, ইন্তিফাদা ফাউন্ডেশনের সদস্য মাওলানা শাফায়াত আদনান, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সূরাহ সদস্য আবু বকর সিদ্দিক, ইসলামী ছাত্রশিবির চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার প্রচার সম্পাদক বায়জিদ বোস্তামী, মেহেদী হাসান ও জামাল উদ্দিনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।