৪৫ বসন্ত পেরিয়ে শাবনূর
শীর্ষে থাকা ক্যারিয়ার কেন বিসর্জন দিয়েছেন শাবনূর
- আপডেট সময় : ০৮:২৯:৩৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪
- / 107
নব্বইয়ের দশকের তুমুল জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা শাবনূর। ঢাকাই সিনেমার ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়িকাদের মধ্যে একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয় তাকে। নানামাত্রিক চরিত্রে অভিনয় দক্ষতা দেখিয়ে শাবনূর যেভাবে দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছেন, এতে তাকে আদর্শ হিসেবে মানেন এই প্রজন্মের অনেক নায়িকা। বাংলা চলচ্চিত্রের বহু প্রতিভাধর সেই চিত্রনায়িকার আজ জন্মদিন। জীবনের ৪৫টি বসন্ত পেরিয়ে আজ ৪৬ বছরে পা দিলেন।
১৯৭৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর খ্যাতিমান এই নায়িকার জন্ম হয়েছিল যশোরের শার্শা উপজেলায়। তার বাবার নাম শাহজাহান চৌধুরী। তিন ভাই-বোনের মধ্যে শাবনূর সবচেয়ে বড়। তার ছোট বোনের নাম ঝুমুর, ভাই তমাল।
পারিবারিকভাবে শাবনূরের নাম রাখা হয় কাজী শারমিন নাহিদ নূপুর। পরে স্বনামধন্য চলচ্চিত্র পরিচালক এবং তার মেনটর এহতেশাম কাজী শারমিন নাহিদ নূপুরকে বানিয়ে দেন শাবনূর। শাবনূর শব্দের অর্থ হচ্ছে রাতের আলো।
১৯৯৩ সালে ‘চাঁদনী রাতে’ ছবির মাধ্যমে পরিচালক এহতেশামের হাত ধরে চলচ্চিত্রে পা রাখেন শাবনূর। প্রথম ছবি ব্যর্থ হলেও প্রয়াত সুপারস্টার নায়ক সালমান শাহর সঙ্গে জুটি বেঁধে উপহার দেন বেশ কয়েকটি সুপারহিট ও ব্যবসাসফল ছবি। সালমান-শাবনূর জুটিকে বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে অন্যতম সেরা জুটি হিসেবে এখনো বিবেচনা করা হয়।
সালমান শাহর মৃত্যুর পর নায়ক মান্না, রিয়াজ, শাকিল খান, ফেরদৌস ও শাকিব খানের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন বহু ছবিতে। সেখানেও পেয়েছেন তুমুল জনপ্রিয়তা। অভিনয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ একবার ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’, রেকর্ড ১০ বার ‘মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার’ এবং সাতবার ‘বাচসাস পুরস্কার’সহ অসংখ্য সম্মাননা লাভ করেছেন শাবনূর।
২০১২ সালের ২৮ ডিসেম্বর তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর থেকেই ধীরে ধীরে চলচ্চিত্রে অনিয়মিত হয়ে পড়েন শাবনূর। বিয়ের পর ভাই ও বোনদের মতো শাবনূরও স্বামী অনিকের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস শুরু করেন এবং সেখানকার নাগরিকত্ব লাভ করেন। ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর শাবনূর-অনিক জুটির ঘর আলো করে আসে তাদের প্রথম সন্তান পুত্র আইজান নিহান।
২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি অনিক মাহমুদের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদ হয়। বর্তমানে সন্তানকে নিয়ে স্থায়ীভাবে অস্ট্রেলিয়াতেই বসবাস করছেন বাংলা চলচ্চিত্রের এক সময়ের সুপারহিট এই নায়িকা।
গেল বছর সমকালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শাবনূর বলেন, ‘আমার ভাই-বোনসহ সবাই অস্ট্রেলিয়ায়। মূলত আমার ছেলের জন্য সেখানে গিয়েছি। নিজের কথা কখনও ভাবিনি। আমার জনপ্রিয়তা যখন তুঙ্গে, তখন ভেবেছি– আমার জীবনে তো অনেক কিছু হয়েছে- এখন তো ছেলেকে মানুষের মতো মানুষ করতে হবে। বলা চলে, ছেলের জন্য তুঙ্গে থাকা ক্যারিয়ার বিসর্জন দিয়েছি।’
ফের চলচ্ছিত্রে ফিরছেন তিনি। গেল বছর জানুয়ারি মাসে তিনি শুরু করেছেন ‘রঙ্গনা’ নামের একটি সিনেমার শুটিং। এই সিনেমার মহরতেই শাবনূরের সামনেই ঘোষণা করা হয় ‘এখনো ভালোবাসি’ সিনেমা। এছাড়া চয়নিকা চৌধুরীর ‘মাতাল হাওয়া’ নামে আরও একটি সিনেমায় অভিনয় করার কথা আছে তার।
এদিকে সিনেমার ঘোষণা দিলেও পুরোপুরি ফিট না হয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে চাননা শাবনূর। তাই সময় নিচ্ছেন। এখন অপেক্ষা শুধু ফেরার।