ঢাকা ০৪:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
**সদ্যপ্রাপ্ত সংবাদ**
Logo শেখ মুজিবের জন্য ১০ লাখ মানুষ মারা গেছে: শফিকুল আলম Logo আমরা বেঁচে থাকতে সীমান্তে কেউ আসতে পারবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Logo মৌলভীবাজারে যুবদল নেতা ছুরিকাঘাতে নিহত Logo মৌলভীবাজারে শাহ মোস্তফা (রহ.)-এর ওরসে হাজারও ভক্ত অনুরাগী ও দর্শনার্থীদের সমাগম Logo গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র ছাড়া এই সরকার বেআইনি ও অবৈধ Logo সংস্কার প্রতিবেদন থেকে নতুন চার্টার, তার ভিত্তিতেই নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা Logo মৌলভীবাজারে প্রেরণা মেধাবৃত্তি’র ফলাফল প্রকাশ Logo জাকের পার্টি ছাত্রফ্রন্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ছাত্র সম্মেলন অনুষ্ঠিত Logo শেরপুরে চলছে প্রায় ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা Logo মনে রাখবেন যারা অন্যায় করের তারা সংখ্যায় কম, আপনারা দাঁড়িয়ে গেলে শেখ হাসিনার মতো পালিয়ে যাবে: সারজিস আলম

মানিকগঞ্জের সিংগাইর

এক উপজেলাতেই শতকোটি টাকার পেঁপে বিক্রির সম্ভাবনা

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময় : ১০:৫১:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / 42
প্রথম পোস্ট সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

অল্প সময়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় মানিকগঞ্জের সিংগাইরে বাড়ছে পেঁপের আবাদ। কৃষকরা পেঁপে চাষে আগ্রহী হওয়ায় গত বছরের চেয়ে এ বছর ১০০ হেক্টর জমিতে পেঁপের আবাদ বেশি হয়েছে। উপজেলার এসব পেঁপে স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে চলে যাচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সিংগাইর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভায় এ মৌসুমে সাড়ে সাতশ হেক্টর জমিতে পেঁপের আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ১০০ হেক্টর বেশি। প্রতি বিঘায় কৃষকের খরচ হয় ৫০ হাজার টাকা। আর প্রতি বিঘায় কমপক্ষে ফলন আসে ১২ টনের মতো।

চর আজিমপুর গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন বাবুল বলেন, আমি এবার ১৬ বিঘা জমিতে পেঁপের আবাদ করেছি। আর সেই সঙ্গে ধনিয়া, মিষ্টি কুমড়াসহ নানা সবজি সাথী ফসল আবাদ করেছি। এ বছর পেঁপে আবাদ করে ১৮ লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি করেছি।

একই এলাকার মোজাম্মেল খান বলেন, পেঁপে চাষ শুরু করেছিলাম চার বছর আগে। তার আগে শুধু গাজর চাষ করতাম। তবে, আমাদের এলাকার অনেক কৃষক গাজরের সাথে পেঁপের সাথী ফসল হিসেবে চাষ করতো। আমি প্রথমে এক বিঘা জমিতে পেঁপের আবাদ করি। এখন আমি তিন বিঘায় পেঁপের আবাদ করছি। তিন লাখ টাকার বিক্রি করেছি। আরো দুই লাখ টাকার বিক্রি করতে পারবো। আর কিছু পেঁপে পাকিয়ে বিক্রি করা ইচ্ছা আছে।

অপেক্ষাকৃত উঁচু জমির কারণে সিংগাইরের পেঁপের আকার ও মান ভালো। কম খরচে চারা রোপণের ৪ থেকে ৫ মাসেই ফলন পাওয়া যায় বলে উপজেলার পেঁপের আবাদে জড়িয়েছেন স্থানীয় প্রায় আড়াই হাজার কৃষক। ব্যাপক চাহিদা থাকায় পাইকাররা ক্ষেত থেকেই পেঁপে কিনে নিয়ে যান। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে যা চলে যায় রাজধানী ঢাকাসহ আশুলিয়া, বাইপেল, সাভার, গাজীপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে।

উপজেলার ভাকুম এলাকার পাইকারি ব্যবসায়ী রবকত হোসেন জানান, আমাদের সিংগাইরে প্রচুর পরিমাণ সবজির আবাদ হয়। একেক মৌসুমে আমরা একেক সবজি কিনে তা দেশের বিভিন্ন আড়তে বিক্রি করে থাকি। বর্তমানে আমি প্রতিদিন আমাদের এলাকার পেঁপে কিনে তা ঢাকাসহ গাজীপুর, নোয়াখালী, ফেনীতে বিক্রি করছি। সিংগাইরের পেঁপের স্বাদ ও আকার ভালো হওয়ায় এর চাহিদা আড়তগুলোতে খুব দ্রুত বিক্রি হয়ে যায়।

জয়মন্টপ এলাকার পাইকার আলমগীর জানান, আমাদের সিংগাইর উপজেলায় প্রায় সাড়ে তিনশো থেকে চারশো ব্যাপারী আছি। প্রতিদিন আমি ২৫ থেকে ৩০ মণ করে পেঁপে কিনে তা আশুলিয়া, বাইপেল, সাভার ও ঢাকায় বিক্রি করি।

পাইকারি ব্যবসায়ী রবকত হোসেন বলেন, সিংগাইরে প্রচুর সবজি আবাদ হয়। বর্তমানে পেঁপে ঢাকাসহ গাজীপুর, নোয়াখালী, ফেনী বাজারে পাঠাচ্ছি। ভালো স্বাদ ও আকারের জন্য সিংগাইরের পেঁপে খুব দ্রুত বিক্রি হয়ে যায়।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুল বাশার চৌধুরী জানান, সিংগাইরে এ মৌসুমে সাড়ে সাতশ হেক্টর জমিতে পেঁপের আবাদ হয়েছে। বেশিরভাগ চাষি গাজরের সাথী ফসল হিসেবে পেঁপে চাষ করেন। একটি পেঁপে গাছ তিন বছর পর্যন্ত ফলন দিয়ে থাকে। তাছাড়াও স্বল্প সময়ের জন্য সাথী ফসল হিসেবে ধনিয়াও করেন অনেক কৃষক। এতে করে প্রতিটি কৃষক আর্থিকভাবেও লাভবান হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন জাতের সবজির পাশাপাশি পেঁপে চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। তাদের সহায়তায় নানা কর্মসূচি নেয়া হচ্ছে। এ মৌসুমে সিংগাইর উপজেলা প্রায় একশ কোটি টাকার পেঁপে বিক্রি আশা কৃষি বিভাগের।

নিউজটি শেয়ার করুন

মানিকগঞ্জের সিংগাইর

এক উপজেলাতেই শতকোটি টাকার পেঁপে বিক্রির সম্ভাবনা

আপডেট সময় : ১০:৫১:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

অল্প সময়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় মানিকগঞ্জের সিংগাইরে বাড়ছে পেঁপের আবাদ। কৃষকরা পেঁপে চাষে আগ্রহী হওয়ায় গত বছরের চেয়ে এ বছর ১০০ হেক্টর জমিতে পেঁপের আবাদ বেশি হয়েছে। উপজেলার এসব পেঁপে স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে চলে যাচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সিংগাইর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভায় এ মৌসুমে সাড়ে সাতশ হেক্টর জমিতে পেঁপের আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ১০০ হেক্টর বেশি। প্রতি বিঘায় কৃষকের খরচ হয় ৫০ হাজার টাকা। আর প্রতি বিঘায় কমপক্ষে ফলন আসে ১২ টনের মতো।

চর আজিমপুর গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন বাবুল বলেন, আমি এবার ১৬ বিঘা জমিতে পেঁপের আবাদ করেছি। আর সেই সঙ্গে ধনিয়া, মিষ্টি কুমড়াসহ নানা সবজি সাথী ফসল আবাদ করেছি। এ বছর পেঁপে আবাদ করে ১৮ লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি করেছি।

একই এলাকার মোজাম্মেল খান বলেন, পেঁপে চাষ শুরু করেছিলাম চার বছর আগে। তার আগে শুধু গাজর চাষ করতাম। তবে, আমাদের এলাকার অনেক কৃষক গাজরের সাথে পেঁপের সাথী ফসল হিসেবে চাষ করতো। আমি প্রথমে এক বিঘা জমিতে পেঁপের আবাদ করি। এখন আমি তিন বিঘায় পেঁপের আবাদ করছি। তিন লাখ টাকার বিক্রি করেছি। আরো দুই লাখ টাকার বিক্রি করতে পারবো। আর কিছু পেঁপে পাকিয়ে বিক্রি করা ইচ্ছা আছে।

অপেক্ষাকৃত উঁচু জমির কারণে সিংগাইরের পেঁপের আকার ও মান ভালো। কম খরচে চারা রোপণের ৪ থেকে ৫ মাসেই ফলন পাওয়া যায় বলে উপজেলার পেঁপের আবাদে জড়িয়েছেন স্থানীয় প্রায় আড়াই হাজার কৃষক। ব্যাপক চাহিদা থাকায় পাইকাররা ক্ষেত থেকেই পেঁপে কিনে নিয়ে যান। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে যা চলে যায় রাজধানী ঢাকাসহ আশুলিয়া, বাইপেল, সাভার, গাজীপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে।

উপজেলার ভাকুম এলাকার পাইকারি ব্যবসায়ী রবকত হোসেন জানান, আমাদের সিংগাইরে প্রচুর পরিমাণ সবজির আবাদ হয়। একেক মৌসুমে আমরা একেক সবজি কিনে তা দেশের বিভিন্ন আড়তে বিক্রি করে থাকি। বর্তমানে আমি প্রতিদিন আমাদের এলাকার পেঁপে কিনে তা ঢাকাসহ গাজীপুর, নোয়াখালী, ফেনীতে বিক্রি করছি। সিংগাইরের পেঁপের স্বাদ ও আকার ভালো হওয়ায় এর চাহিদা আড়তগুলোতে খুব দ্রুত বিক্রি হয়ে যায়।

জয়মন্টপ এলাকার পাইকার আলমগীর জানান, আমাদের সিংগাইর উপজেলায় প্রায় সাড়ে তিনশো থেকে চারশো ব্যাপারী আছি। প্রতিদিন আমি ২৫ থেকে ৩০ মণ করে পেঁপে কিনে তা আশুলিয়া, বাইপেল, সাভার ও ঢাকায় বিক্রি করি।

পাইকারি ব্যবসায়ী রবকত হোসেন বলেন, সিংগাইরে প্রচুর সবজি আবাদ হয়। বর্তমানে পেঁপে ঢাকাসহ গাজীপুর, নোয়াখালী, ফেনী বাজারে পাঠাচ্ছি। ভালো স্বাদ ও আকারের জন্য সিংগাইরের পেঁপে খুব দ্রুত বিক্রি হয়ে যায়।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুল বাশার চৌধুরী জানান, সিংগাইরে এ মৌসুমে সাড়ে সাতশ হেক্টর জমিতে পেঁপের আবাদ হয়েছে। বেশিরভাগ চাষি গাজরের সাথী ফসল হিসেবে পেঁপে চাষ করেন। একটি পেঁপে গাছ তিন বছর পর্যন্ত ফলন দিয়ে থাকে। তাছাড়াও স্বল্প সময়ের জন্য সাথী ফসল হিসেবে ধনিয়াও করেন অনেক কৃষক। এতে করে প্রতিটি কৃষক আর্থিকভাবেও লাভবান হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন জাতের সবজির পাশাপাশি পেঁপে চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। তাদের সহায়তায় নানা কর্মসূচি নেয়া হচ্ছে। এ মৌসুমে সিংগাইর উপজেলা প্রায় একশ কোটি টাকার পেঁপে বিক্রি আশা কৃষি বিভাগের।