সদ্যপ্রয়াত নাট্যকার ও অভিনেতা মনোজ মিত্রের স্মরণে গত ২০ ও ২৩ নভেম্বর আইইউবি থিয়েটারের প্রযোজনায় মঞ্চস্থ হলো ‘নরক গুলজার’। আইইউবি থিয়েটার নাটকটি প্রথমবার মঞ্চস্থ করে গত ২০ নভেম্বর ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি মিলনায়তনে। নাটকটি দ্বিতীয়বার মঞ্চস্থ হয় ২৩ নভেম্বর ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অল স্টারস ড্যাফোডিল আয়োজিত ‘তারার চতুর্দশী নাট্যোৎসব ২০২৪’-এর অংশ হিসেবে।

এটি ছিল আইইউবি থিয়েটারের ২২তম প্রযোজনা। রাজনৈতিক স্যাটায়ারধর্মী নাটকটির রচয়িতা প্রয়াত মনোজ মিত্র। নির্দেশনায় ছিলেন শামীম সাগর ও সহ-নির্দেশনায় ছিলেন সাইফুল ইসলাম। গত ১২ নভেম্বর পরলোকগমন করেন স্বনামধন্য অভিনেতা ও নাট্যকার মনোজ মিত্র।

মনোজ মিত্র ছিলেন একাধারে মঞ্চ, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অভিনেতা এবং নাট্যকার। ১৯৩৮ সালের ২২ ডিসেম্বর বাংলাদেশের সাতক্ষীরার ধুলিহর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৭ সালে তিনি কলকাতায় মঞ্চ নাটকে অভিনয় শুরু করেন। চলচ্চিত্রে অভিনয়ের শুরু ১৯৭৯ সালে। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যকলা বিভাগে যোগ দেওয়ার আগে বিভিন্ন কলেজে দর্শন বিষয়ে শিক্ষকতাও করেন তিনি।

আরও পড়ুন: সান্দাকফু পর্বতে যেতে হলে পর্যটকদের মানতে হবে বড় নির্দেশিকা

আইইউবির মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের প্রভাষক এবং আইইউবি থিয়েটারের সমন্বয়ক মমতাজ পারভীন বলেন, মনোজ মিত্রের নাটক আগে সাহিত্য, পরে নাটক। তার সংলাপ সৃজন চমৎকার। সংলাপের যেমন নাট্যগুণ, তেমনই সাহিত্যগুণ। কাব্যময় সংলাপ লিখতে সিদ্ধহস্ত ছিলেন তিনি। বিশেষ করে ইতিহাস ও পুরাণ আশ্রিত নাটকগুলোর সমকালীনতা ধরার জন্য যেভাবে কাব্যময় সংলাপ ব্যবহার করেছেন, তা একমাত্র মনোজ মিত্রের পক্ষেই সম্ভব।

নির্দেশক শামীম সাগর বলেন, নাটকটির বিষয়বস্তুতে আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়ের স্যাটায়ারধর্মী প্রকাশভঙ্গি অসাধারণ। দর্শক যেন স্যাটায়ারের কমেডি রসটা উপভোগ করার পাশাপাশি নাটকের মূল বক্তব্যটা উপলব্ধি করতে পারে, সেটি নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশক হিসেবে আমি চেষ্টা করেছি।

নাটকটিতে অংশ নেয় আইইউবি থিয়েটার ক্লাবের একঝাঁক নবীন নাট্যকর্মী শিক্ষার্থী। যাদের মধ্যে ছিলেন মো. বাসিতুল্লাহ খান, আনিকা বুশরা শশী, আব্দুল্লাহ আল মাহিন সিয়াম, মো. তৌহিদুল ইসলাম অংকুর, জেবা তাহসিন, রিশাদ হাসান প্রমিত, এস এম শাকিল আমিন, ওমর খুবাইন যাহিন, নূরে মুক্তাদির আজমীর, মোছা. সাদিয়া আফরিন অর্না, আশরাফুল করিম চৌধুরী, সামিয়া রেজা মাইশা, কিরণ সরকার জুঁই, নুসরাত জাহান লিয়ন, সুকন্যা সালসাবিল খান এবং আনিকা ফাইরুজ। প্রযোজনা নিয়ন্ত্রণে ছিলেন সৌহার্দ্য পাল।

নির্দেশকের অভূতপূর্ব পরিকল্পনা ও ফিউনশনের মধ্য দিয়ে স্বর্গ-নরকের অনন্য উপস্থাপন এবং আইইউবি থিয়েটারের সদস্যদের প্রাণবন্ত অভিনয়ে উপস্থিত দর্শকদের মন জয় করে নেয়।